মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন
সাপ্তাহিক ভোলাবানী পত্রিকা অফিস থেকে বের হবার সময় ভোলাবানী পত্রিকা অফিসে প্রবেশ করলেন সাংবাদিক ফরিদ হোসেন বাবুল (ভোরের কাগজ), মোঃ হুমায়ুন কবীর(দৈনিক ইনকিলাব) এবং ভোলাবানী সাংবাদিক সাজ্জাদুর রহমান সামুন। ভোলাবানীর সম্পাদক আবু সুফিয়ান বাহার আমার সাথে তিনজনের পরিচয় করিয়ে দিলেন। আবার চা ও বিস্কুট আসল। নাস্তা করার পর কিছুক্ষন বড় মাপের জ্ঞানী সাংবাদিকদের আলোচনা মনোযোগ সহকারে শুনলাম। দেখলাম তারা সৌহার্দমুলক পরিবেশে বিভিন্ন সংবাদ নিয়ে আলোচনা করছে এবং একজন অন্য জনের সংবাদের সমালোচনা করছে।
আমি চলে আসার সময় সাপ্তাহিক ভোলাবানী সম্পাদক আবু সুফিয়ান বাহারকে স্যার বলার পর তিনি বললেন, সাংবাদিকতা জগতে কোন স্যার নেই, সবাই ভাই ভাই। আমি বললাম বাহার ভাই আজ আমি আসি। তিনি বললেন, আল্লাহ হাফেজ এবং তিনি আবারও বললেন, আগে পড়াশুনা তারপর সাংবাদিকতা। বাহার ভাই আরো জানালের লালমোহন থেকে আরো অনেকে সংবাদ পাঠান, তারা হলো, মোঃ বজলুর রহমান ও শাহ মোঃ গোলাম মাওলা এবং মাঝে মাঝে সিদ্দিকুর রহমান মান্না ও লেখা পাঠায়। উল্লেখ্য লালমোহনের প্রথম সাংবাদিক ছিলেন প্রধান শিক্ষক জনাব আঃ রাজ্জাক। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের লালমোহন প্রতিনিধি ছিলেন।
লালমোহন আসার পর বজলুর রহমান ভা্ই ও শাহ মোঃ গোলাম মাওলাকে খুঁজে বের করলাম। সিদ্দিকুর রহমান মান্নার সাথে সাক্ষাত হলো। বজলু ভাইর কাছ থেকে তার লেখা এবং ভোলাবানীতে ছাপা এবং অন্যান্য পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা সম্বলিত পত্রিকা সংগ্রহ করলাম। সিদ্দিকুর রহমান মান্নার সাথে একটা ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠল। তাদের প্রকাশিত লেখা পরে সাংবদিকতা শেখার চেষ্টা করলাম। এর মধ্যে ঢাকা থেকে নতুন একটি পত্রিকা বের হলো। ভোরের কাগজের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর ভোরের কাগজ হতে পদত্যাগ করে তার সম্পাদনায় বের করলো দৈনিক প্রথম আলো। ভোলা প্রতিনিধি হলো ফরিদ হোসেন বাবুল।
সম্ভবত ১৯৯০ এর দশকে একটা কাজে ভোলা যাই। তখন ভোলার বোরহানউদ্দিন থানার সাবেক এক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিল। তার স্ত্রী ও সন্তান থাকা স্বত্যেও এক এসিড মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এসিড দ্ধগ্ধ মেয়েকে স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে বিয়ে করা এবং দুই স্ত্রীকে নিয়ে একই বাসায় সুঃখে শান্তিতে সংসার করা নিয়ে একটি বিশেষ স্বচিত্র প্রতিবেদন দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়। চমৎকার লেখার জন্য ফরিদ হোসেন বাবুল ভাইকে নিয়ে প্রসংশা শুরু হয়। দৈনিক প্রথম আলো সব কপি বিক্রি হয়ে যায় এবং পত্রিকার ফটোকপি ও বিক্রি হয়। আমিও ফটোকপি ক্রয় করেছি। চমৎকার একটি প্রতিবেদন ছিল যা আজও আমার মনে আছে। অধ্যক্ষ ফারুকুর রহমান ইত্তেফাকে খুব কম লেখা পাঠাতেন। বিশেষ কিছু সংবাদ পাঠাতেন যা সবার নজরে পড়ত। অধ্যক্ষ আফসার উদ্দিন বাবুল ভাই রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংবাদ পাঠাতেন। তিনি একজন সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন। চমৎকার গান গাইতেন।
দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি মোবাস্বের উল্লাহ চৌধুরীর অনুসন্ধনী প্রতিবেদন লিখতেন। তিনি দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। তাকে দূর্নীতিবাজরা ভয় পেতেন। তাদের প্রকাশিত সংবাদগুলো সংগ্রহ করতাম এবং নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করতাম। ইনকিলাবের হুমায়ুন কবীর ভাই ও সব ধরনের সংবাদ লিখতেন।তারা ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত সাংবাদিক। সাংবাদিকতা ছিল তাদের কাছে শখের মত। বিভিন্ন পেশার ফাঁকে তারা সাংবাদিকতা করতেন। সাংবাদিকতা তাদের কাছে কোন প্রকার পেশা বা ব্যবসা ছিল না। তাই তাদেরকে আজও আমি সম্মানের সাথে দেখি। অধ্যক্ষ ফারুকুর রহমান ভাই এক সময় ভোলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। আজ সাংবাদিকতা থেকে অবসরে আছেন। মোবাস্বের উল্লাহ চৌধুরীর ও শুনেছি আজ সাংবাদিকতা হতে অনেক দুরে। ভোলাবানীর সম্পাদক আবু সুফিয়ান বাহার ও ফরিদ হোসেন বাবুল ভাই অনেক আগে এবং কিছুদিন পূর্বে অধ্যক্ষ আফসার উদ্দিন বাবুল ভাই আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।—– চলবে—


















