তথ্য পাচারের অভিযোগে ফরিদপুর নৌপুলিশের সাবেক এসপি আব্দুল্লাহ আরেফকে শোকজ করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। একই অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় একজন কনস্টেবল যশোর কারাগারে আছেন। দিকে অভিযোগের বিষয়ে তার কাছে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এ নোটিশে বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারে জড়িত একটি সিন্ডিকেটের সঙ্গে এসপি আব্দুল্লাহ আরেফের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।এ এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ ডিসেম্বর আব্দুল্লাহ আরেফকে ফরিদপুর নৌপুলিশের এসপির পদ থেকে প্রত্যাহার করে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার মদমর্যাদার বিতর্কিত এই কর্মকর্তাকে তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। তদন্তে তথ্য পাচারে যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তবে ওই কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হলেও রহস্যজনক কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন এসপি আব্দুল্লাহ আরেফ। পুলিশ সদর দপ্তরের নোটিশে যা আছে: পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত চিঠিতে আব্দুল্লাহ আরেফের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ উল্লেখ করে লিখিত জবাব চাওয়া হয়। ২২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আব্দুল্লাহ আরেফকে উদ্দেশ করে বলা হয়, বাস্তবিক অর্থে নৌপুলিশের কোনো কর্মকাণ্ড বেনাপোলে নেই।
অথচ প্রায়ই বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশে কর্মরত (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত ও রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় কারাগারে) জনৈক কনস্টেবলের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেছেন। এই কনস্টেবলের সঙ্গে ২০১৯ সালের ৮ জুলাই হোয়াটসঅ্যাপে তিনবার, ৫ সেপ্টেম্বর সরাসরি একবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া নানাভাবে তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রাখতেন। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বিদেশে তথ্য পাচারের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত।nরিপোর্টে আরও বলা হয়, নৌপুলিশের এসপি পদে ফরিদপুরে থাকাকালীন ধর্মীয় একটি বিতর্কিত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগও করেন আব্দুল্লাহ আরেফ। দুইবার ওই জোটের অফিসে গিয়ে তাদের উপদেষ্টা হিসেবে স্বেচ্ছায় কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন। একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে এভাবে কোনো সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন নেন আব্দুল্লাহ আরেফ। এছাড়া এ ঘটনায় কারাবন্দি জনৈক কনস্টেবলের মুঠোফোনে পাওয়া মনোনয়নের ওই চিঠি দ্বারা এ বিষয়টিও প্রমাণিত বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। স্পর্শকাতর এসব অভিযোগ কর্মচারী শৃঙ্খলা বিধিমালা অনুযায়ী গুরুদণ্ডের অপরাধ। একই সঙ্গে এসপি আব্দুল্লাহ আরেফের কর্মকাণ্ড সরকারি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অবহেলা, যথাযথ কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্যের শামিল। এমতাবস্থায় তার বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না মর্মে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট জবাব দাখিল করার কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসপি আব্দুল্লাহ আরেফ বলেন, ‘সবই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমাকে জড়িয়ে যা বলা হচ্ছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। এসব তথ্যপ্রমাণ ভোগাস, বানানো।