Tuesday, June 24, 2025
Homeঅপরাধ‘পুরুষ রোগীকে পছন্দ হলেই চলতো যৌন নির্যাতন’

‘পুরুষ রোগীকে পছন্দ হলেই চলতো যৌন নির্যাতন’


গাজীপুরে একটি মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের জন্য কেন্দ্র খোলা হলেও সেখানে চলতো শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন। কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে থেকে হাতিয়ে নেয়া হতো লাখ লাখ টাকা। কোনো রোগী তাদের অভিভাবকদের কাছে অভিযোগ করলে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যেত। নিরাময় কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধনসহ তার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ছিলেন মাদকাসক্ত।
গতকাল মঙ্গলবার শহরের কালাসিকদারের ঘাট এলাকার ‘ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র’ থেকে র‌্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যৌথ অভিযান চালিয়ে ফিরোজা নাজনীন বাধনসহ মোট পাঁচজনকে আটক করে। এদিন বিকেলে ওই কেন্দ্রের সামনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন প্রেস ব্রিফিংএ জানান, কেন্দ্রে থাকা ২৮ জনকে মঙ্গলবার বিকেলে তাদের পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনা, চিকিৎসা ও রোগীদের যেসব সেবা দেওয়ার কথা তা দেওয়া হতো না। এ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মানসিক, শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হতো বলে কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধনের বিরুদ্ধে র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করেছে কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা ভর্তি রোগীরা।
তিনি আরো বলেন, এ কেন্দ্র চিকিৎসার নামে জোরপূর্বক রোগীদের আটকিয়ে রাখা হতো। এমনও রোগী রয়েছেন যিনি তিন বছর ধরে এ কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। রোগীরা কোন প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের উপর নির্যাতন করতেন মালিকের পালিত কর্মচারীরা। এ রকম ৫/৭ জন রোগী পাওয়া গেছে যাদের উপর শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
২০০৯ সালে কেন্দ্রটি অনুমোদনহীনভাবে শুরু করলেও পরে তার অনুমোদন নেওয়া হয়। পরে মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধন কোনো প্রকার নিয়ম-কানুন না মেনে কেন্দ্রটি পরিচালনা করতে থাকেন।
জানা গেছে, রোগীকে পছন্দ হলেই যৌন নির্যাতন করতেন মাদক নিরাময় কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী সাংবাদিকদের জানান, ‘কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীকে কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাধনের পছন্দ হলে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হতো। ’ অপর এক রোগীর মা জানান, ‘তার ১৬ বছরের একমাত্র ছেলে সাত মাস ধরে এ কেন্দ্রে অবস্থান করছে।

এ জন্য তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। ’
এই নিরাময় কেন্দ্রেই ঢাকাই ছবির অভিনেতা অনিক রহমান অভিকে নয় মাস আটকে রেখে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব)-এর কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পর গতকাল মঙ্গলবার অভিযান চালানো হয়।

অভিকে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন চালানো হতো, এমনটা উল্লেখ করে এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। তিনি জানান, ‘চিত্রনায়ক অনিক রহমান অভি মাদকাসক্ত না হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ ৯ মাস শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে শারীরিক যৌন নির্যাতন চালাতেন ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক এক নারী। বিষয়টি গোপন সূত্রের ভিত্তিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‍্যাব অভিযান চালিয়ে সেখানে চিত্রনায়ক অভি’সহ আর ২০ জনকে উদ্ধার করেছে। সেখানে জানানো হয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের লোকজন অভিযান পরিচালনার সময় মাদকাসক্ত ছিলেন!’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য