মোঃ রফিকুল ইসলাম
মহান আল্লাহ তা’আলা এই পৃথিবী মানব জাতির বসবাসের জন্য সৃষ্টি করেছেন। এই পৃথিবী নামক গ্রহটি মানুষের দ্বারা ধ্বংস হবে । কারণ মানুষ যেভাবে এই পৃথিবীতে অত্যাচার জুলুম করে আসছে তাতে মানুষের অপকর্মের কারণেই পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষ ভূমি এবং নদ নদী পাহাড় পবর্ত যেভাবে ব্যবহার করেছে তাতে পৃথিবীর বিপর্যয় অচিরেই ঘটবে এবং মানুষের দ্বারাই তা ধ্বংস হবে।
মহান আল্লাহ তা’আলার রহস্যময় সৃষ্টির মধ্যে পৃথিবী একটি। তবে এই পৃথিবী ঠিক কতদিন আগে সৃষ্টি হয়েছিল বা পৃথিবীর বয়স কত? তা জানা সম্ভব না হলেও আধুনিক বিজ্ঞানীরা যুক্তি দ্বারা কিছুটা প্রমান করতে পারলেও এক এক জনের হিসেবে এক এক রকম। বিজ্ঞানীদের হিসেবের ফল দাড়ায় ১৫০ থেকে ৩০০ কোটি বছর। তবে লর্ড কেলভিন অন্যভাবে হিসেব করে বলেন, পৃথিবীর বয়স ২৭৫ কোটি বছর।(সংগৃহীত)
আবার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর লরেন্স কুলপ ও ডক্টর জর্জ বেট বলেন, পৃথিবীর বয়স ৪৮০ কোটি বছর।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী ওপারিন বলেন, পৃথিবীর বয়স ৫০০ লক্ষ কোটি বছর। তাদের পরেও নানা দেশের বিজ্ঞানীরা ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। তবে কেউ সঠিকভাবে তা প্রকাশ করতে পারেনি। আজকাল বিজ্ঞানীরা কতগুলো পদার্থের তেজস্ক্রিয়তার পরিমান নির্ধারণ করে পৃথিবীর প্রকৃত হিসেব করার চেষ্টা হচ্ছে।
কাজেই পৃথিবীর বুকে কোন পাথরের স্তরে ইউরেনিয়াম আর সীসার পরিমাণ যদি ঠিকভাবে বের করা যায়, তা থেকেও জানা যাবে পদার্থের এই সীসায় পরিণত হতে কতদিন লেগেছিল এবং তা থেকেই মোটামুটি জানা যাবে পৃথিবীর বয়স কত। যখন পৃথিবীর সৃষ্টি হয় তখন তা ছিল সূর্যের মতোই জ্বলন্ত গ্যাসপিন্ড। সেটা অবশ্য সূর্যের চেয়ে অনেক গুন ছোট ছিল। এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা হিসেব করে জানতে পেরেছেন, পৃথিবীর বয়সের নিম্নতম সীমা আনুমানিক দশ বিলিয়ন বছর এবং ঊর্ধ্বতম সীমা প্রায় কুড়ি বিলিয়ন বছর।
পৃথিবীর শুরুই হয়েছিল সমুদ্র থেকে আর কিছুদিন আগে সেই সমুদ্রেই পাওয়া গেছে ১৭০ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিক কণা! যা পৃথিবী ধ্বংসের পূর্বলক্ষন। আমাদের মনে রাখতে হবে এই সুন্দর পৃথিবী এবং মানব সভ্যতা টিকে আছে এই সমুদ্রের ওপর নির্ভর করে। পৃথিবীর ৭০ ভাগ প্রাণের বসবাস এই সমুদ্রে। এছাড়া ডাঙ্গায় থাকা প্রাণীদের জন্য সরবরাহ করা অক্সিজেনেরও বেশীর ভাগ আসে এই সমুদ্র থেকেই। কিন্তু মানুষের দূষণের কারণে সেই সমুদ্রই আজ বিপন্ন হওয়ার পথে। গবেষকরা জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে সমুদ্রে ১৭১ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিক টুকরা রয়েছে এবং এর সম্মলিত ওজন ২.৩ মিলিয়ন টন! (সংগৃহীত)
সিএনএন জানিয়েছে, ১৯৭৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণের পর এই ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল। আটলান্টিক, প্রশান্ত এবং ভারত মহাসাগরের পানি বিশ্লেষণ করেছেন তারা। অন্তত ১২ হাজারটি স্থান থেকে তারা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৫ সালের পর থেকে প্লাস্টিক দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। (সংগৃহীত)
স্টিফেন হকিং ভবিষ্যত বাণী: জলবায়ু পরিবর্তন, উলক্কাঝড়ের আঘাত এবং অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে পৃথিবী ধ্বংস হবে তাই মানব জাতি বসবাসের জন্য অন্য কোন গ্রহ খুঁজে নেয়ার জন্য উপদেশ দিয়েছিলেন।
হকিং আরো বলেছিলেন মানুষের আহাম্মকি ও লোভের কারণে এই পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটবে। তিনি বলেন প্রধানত আহাম্মকি পরমানু অস্ত্র প্রতিযোগিতা আর লোভের খেসারত পৃথিবী দিচ্ছে জলবায়ুর প্রভাব।
বর্তমানে যে হারে প্লাস্টিক সমুদ্রে প্রবেশ করছে তা রোধ করার জন্য নীতিগত পদক্ষেপ না নিলে আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক দূষণ বহুগুনে বৃদ্ধি পেতে পারে। সহজ এবং কম খরচে প্লাস্টিক দ্রব্যাদি হাত বাড়ালেই পাচ্ছে বলে প্লাস্টিক পণ্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থা সেইভাবে গড়ে উঠেনি।ফলে পরিবেশে মিশে দূষণ ঘটাচ্ছে। প্লাস্টিক কখনো পচে না।
সেই প্লাস্টিক বর্জ্যের বিপুল পরিমাণ সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। বেশিরভাগই ভূমি থেকে আসে। নদী, বৃষ্টি, বাতাস কিংবা ড্রেনের মাধ্যমে এগুলো সমুদ্রে জায়গা করে নেয়। তাছাড়া সমুদ্রেও মাছ ধরার নৌকাগুলো প্রচুর প্লাস্টিক ফেলে। প্লাস্টিক কখনো পচে যায় না। এগুলো বরঞ্চ ছোট ছোট টুকরো হয়ে ভেঙ্গে যায়। এই কণাগুলিকে সমুদ্র থেকে পরিস্কার করাও কঠিন।
সামুদ্রিক জীব এই প্লাস্টিকের কারণে বিপন্ন হওয়ার পথে। তারা এই প্লাস্টিকের বর্জ্যে আটকে যায়। আবার খাবার মনে করে গিলে ফেলে। এতে বিলিয়ন বিলিয়ন সামুদ্রিক প্রানির মৃত্যু হয়েছে। প্লাস্টিক শুধু একটি পরিবেশগত বিপর্যয়B নয়, প্লাস্টিক একটি বিশাল জলবায়ুগত সমস্যাও। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে প্লাস্টিক। আসুন আমরা প্লাস্টিক বর্জন করি, পরিবেশ বাঁচাই, পৃথিবী বাঁচাই, মানুষ বাঁচাই, উদবিদ ও জলজ প্রাণী রক্ষা করি। লেখকঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম। একান্ত সচিব, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ, ঢাকা, বাংলাদেশ।