Monday, June 23, 2025
Homeনির্বাচননির্বাচনী সহিংসতা কামনোর কিছু মতামত

নির্বাচনী সহিংসতা কামনোর কিছু মতামত

মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন

আমাদের দেশে এখন চলছে ইউপি নির্বাচনের হাওয়া। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে। নির্বাচনী এলাকায় ‍সহিংসতা ও বেড়ে যাচ্ছে। আর এই সহিংসতায় হাতহত হচ্ছে প্রার্থীসহ সাধারন মানুষ। দেশের প্রতিটি মানুষের সুস্থ্যভাবে নিরাপদে জীবন যাপন করা নাগরিক অধিকার। এই অধিকার রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্ত স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে দলীয় মনোনয়নের ব্যবস্থা চালু করায় বিদ্রোহী গ্রূপ তৈরী হচ্ছে। ফলে সরকারদলীয় দু’গ্রূপের মধ্যেই মারামারি গোলাগুলী বেশী হচ্ছে।

নির্বাচন পূর্ববর্তী মিছিল মিটিং বা প্রচারনা করতে গিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখী হওয়ার ফলে শুরু হয় হাতাহাতি। যা পরবর্তীতে মারাত্নক সহিংসতায় পরিনত হয়। ইতিপূর্বে নির্বাচনী সহিংসতায় অনেক লোক নিহত হয়েছেন। অনেক আহতও হয়েছেন। যা কোন ভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। আর তাদের নিরাপত্তা দেয়াও প্রতিটি রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যে পরে।  

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে বিকল্প বিষয় চিন্তা করার সময় এসেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে অনেক বিষয়ে পরিবর্তন হয়েছে। অনলাইনে ই-কমার্সের মাধ্যমে কেনাকাটায় আমুল পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখন চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী এবং শাড়ী গয়নাসহ অনেক পণ্য ঘরে বসে কেনাকাটা করছে। অনলাইনে পেমেন্ট করছে। বাস ট্রেন, বিমান ও লঞ্চের টিকেট অনলাইনে কিনতে পারছে।

নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু হয়েছে। যদিও তাতেও কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশনকে প্রত্যেক ভোটারদের জাতীয় পরিচয় পত্রের (এনআইডি) সাথে একটি মাত্র মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটাররা নির্বাচনের সময় তার মোবাইল থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে, তার ভোটার নাম্বার, পছন্দের প্রার্থীর নাম, নির্বাচনী এলাকা, এবং প্রতিকের নাম লিখে বাসায় বসে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসের সরকারী একটি নির্দিষ্ট মোবাইল নাম্বারে এসএমএস এর মাধ্যমে ভোট প্রদান করতে পারবে। ভোট দেওয়া সম্পন্ন হলে অটোমেটিক ধন্যবাদ মেসেজ ভোটারের মোবাইলে যাবে, তাতে ভোটার তার ভোট প্রদান সম্পন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত হবেন।

ভোট কেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। এতে সময়ও বাঁচবে নির্বাচনী খরচও কমবে। কেননা নির্বাচনের সময় ব্যালট পেপার ছাপানো, ব্যালট বাক্স কেনা, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য আনছার পুলিশ, স্কুল/কলেজ শিক্ষক, বিভিন্ন অফিসের লোকদের নিয়োগ করা এবং তাদের ভাতা দেওয়ার মাধ্যমে যে খরচ হয় তা সাশ্রয় হবে। সাম্প্রতিক সময়ে জীবনের নিরাপত্তার কারণে অনেক আনছার, পুলিশ, স্কুল/কলেজ শিক্ষক ও বিভিন্ন অফিসের লোকজন নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে চায় না। কেননা বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময়ে সুষ্ট ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে গিয়ে স্কুল/কলেজের শিক্ষক, বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা হতাহত হয়েছেন। নির্বাচনী সহিংসতায় অনেক সময় পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ও হতাহত হয়েছে।         

তবে নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধের বিষয়ে ডিজিটাল চিন্তাভাবনা করা উচিত। আমার মতে স্থানীয় নির্বাচনগুলো একটা তারিখ ঘোষনা হওয়ার পর মিছিল মিটিং করার পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। কোন প্রকার শোডাউন করা যাবেনা। মোবাইলের মাধ্যমে এসএমএস করে ভোট চাইতে হবে। প্রার্থীকে একা প্রচারনা চালাতে হবে, তবে বিশেষ প্রয়োজনে ২/৩ জন লোক নিয়ে প্রচারনা করতে পারবেন। স্থানীয় নির্বাচন অফিস প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য পোষ্টার লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট এলাকা বরাদ্ধ করবেন। পাশাপাশি আইন শৃংক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যেক প্রার্থীর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে। প্রার্থীরা প্রচারনার করার পূর্বে নির্বাচন অফিস ও আইন শৃংক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করতে হবে। নির্বাচনী সহিংসতা কমাতে আমার মতামতগুলো প্রকাশ করলাম।  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য