Wednesday, August 27, 2025
Homeচাকুরী সংবাদদে‌শের পৌরসেবা জর্জরিত জনবল সংকটে, সারা‌দে‌শে ৩১ হাজার পদ ফাঁকা

দে‌শের পৌরসেবা জর্জরিত জনবল সংকটে, সারা‌দে‌শে ৩১ হাজার পদ ফাঁকা

দেশের ৩৩০টি পৌরসভায় দীর্ঘদিন ধরে ৩১ হাজার ১৪২টি পদ শূন্য থাকায় নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ঘাটতির কারণে একজন কর্মকর্তাকে সামলাতে হচ্ছে একাধিক পদ । এর ফলে স্বাস্থ্যসেবা, স্যানিটেশন, প্রকৌশল কাজ এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাপক ব্যাঘাত দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনবল সংকট শুধু প্রশাসনিক সেবাই নয়, বরং উন্নয়ন প্রকল্পকে প্রভাবিত করছে।

দেশের ১২ সিটি কর্পোরেশনের বাইরে ৩৩০টি পৌরসভা ক, খ ও গ—এই তিন শ্রেণিতে বিভক্ত। এসব পৌরসভার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা প্রায় ১ হাজার ৯১২টি পদ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির প্রায় ২৯ হাজার ২৩০টি পদ বছরের পর বছর শূন্য পড়ে আছে। সব মিলিয়ে শূন্য পদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ১৪২টি। একদিকে জনবল সংকট আরেক দিকে হচ্ছে না পদোন্নতিও। শূন্যপদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ পদে ১০ থেকে ১৪ বছর ধরে পদোন্নতি হয়নি, বিশেষ করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোনো পদোন্নতি হয়নি।

দীর্ঘদিন শূন্য থাকা গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর মধ্যে রয়েছে—পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (পূর্বপদ সচিব), প্রশাসনিক কর্মকর্তা, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী ও উপসহকারী প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক, সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং মেডিকেল অফিসার। জনবল সংকটে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে প্রশাসন, প্রকৌশল ও স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রশাসন বিভাগের প্রধান ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’ মেয়র বা প্রশাসকের সঙ্গে যৌথভাবে পৌর তহবিল ও প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু অনেক পৌরসভায় এই পদ শূন্য; কোথাও আবার একজন কর্মকর্তাকে একাধিক পৌরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত হতে পারছেন না। অধিকাংশ পৌরসভায় মেডিকেল অফিসার না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা, পরিচ্ছন্নতা ও স্যানিটেশন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে; মশক নিধন কার্যক্রমও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা অপসারিত হন। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা সপ্তাহে দুই দিন ছুটিতে থাকেন, পাশাপাশি অন্যান্য রুটিন কাজ ও সভায় ব্যস্ত থাকেন। এতে নাগরিক সেবা আরও স্থবির হয়ে পড়েছে।

রংপুর অঞ্চলের একটি ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভার প্রশাসক বলেন, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ এত বেশি যে তা সামলানো কঠিন। মূল দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা কষ্টসাধ্য। বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএপিএস) সভাপতি ও গোসাইরহাট পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল আলীম মোল্লা বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে অনেক কর্মকর্তা একসঙ্গে একাধিক দায়িত্ব পালন করছেন, ফলে নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একজন কর্মকর্তা যদি একাধিক পৌরসভার দায়িত্বে থাকেন, তাহলে কোথাও পর্যাপ্ত সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। শুধু কর্মকর্তা নয়, কর্মচারীর সংখ্যাও প্রয়োজনীয় মানদণ্ডের নিচে, যা সেবাকে প্রভাবিত করছে।

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের (এলজিআরসি) সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রয়োজনীয় জনবল ছাড়া কোনো পৌরসভা টেকসই নাগরিক সেবা দিতে পারে না। সংকট দীর্ঘায়িত হলে শহরের জীবনমান ক্রমেই নিম্নগামী হবে। জনবল সংকট শুধু প্রশাসনিক সেবা নয়, বরং উন্নয়ন প্রকল্প, নাগরিক সুবিধা প্রভাবিত করছে। সরকারের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। এদিকে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছে পৌরসভার প্রায় ৪ শতাধিক কর্মকর্তা, যারা ১০ থেকে ১৪ বছর ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত। প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদ থেকে পৌর নির্বা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য