শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা, টাঙ্গাইল
দীর্ঘ অপেক্ষার পর পরীক্ষামুলক ট্রেন চলাচল শেষে যমুনা রেলওয়ে সেতুর উপর দিয়ে শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্ক সিটি ট্রেনটি বুধবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটে যমুনা রেলওয়ে সেতু পশ্চিমপাড় অতিক্রম করে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। অপরদিকে বুড়িমারি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে এসে ১১ টা ৫০মিনিটে সেতুর পুর্ব পাড় অতিক্রম করে।
যমুনা রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুরর রহমান বলেন, বুধবার সকাল থেকে নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে নতুন এ রেল সেতু দিয়ে। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রথম পাড়ি দিয়েছে এ সেতু দিয়ে। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা রেলসেতুতে দুটি লাইন থাকলেও আপাতত প্রথমে একটি লাইন দিয়েই উভয়দিকে ট্রেন চলাচল করবে। পর্যায়ক্রমে সিডিউল অনুযায়ী বাকি ট্রেনগুলো চলবে। তবে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। যোগাযোগ উপদেষ্টাসহ রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ওই অনুষ্ঠানে থাকবেন। ওই দিন থেকে দুই লাইনে ট্রেন চলাচল করবে। বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে আর ট্রেন চলাচল করবে না।
বিগত ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হয়েছে।
বিগত ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে সরকার। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুরটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।
প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি-জাইকা। দেশের বৃহত্তর এ রেল সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই।
