Tuesday, August 12, 2025
Homeদেশগ্রামটাঙ্গাইলে পল্লী চিকিৎসক সুমন হত্যার বিচার নিয়ে সংশয়

টাঙ্গাইলে পল্লী চিকিৎসক সুমন হত্যার বিচার নিয়ে সংশয়

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা,টাঙ্গাইল :


টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে শোয়াইব তালুকদার সুমন (৩৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসক হত্যা মামলার ঘটনায় মূল আসামিসহ সকল আসামি জামিনে আসায় বিচার পাওয়া নিয়ে হতাশায় ভূগছেন পরিবার। জামিনে পেয়ে আসামিরা চোখের সামনেই বুক ফুলিয়ে ঘোরাফেরা করায় আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তায়ও রয়েছেন তারা।

এদিকে, নিহতের লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও আসেনি। ফলে মামলার চার্জশিট ও অগ্রগতি নেই বলে দাবি করেন পুলিশ। সরজমিনে গিয়ে নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলে এসব বিষয় জানা যায়। এইসময় সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের স্ত্রী, তিন সন্তানসহ পরিবারের লোকজন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তারা।

মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার দয়থা মধ্যপাড়ার আলী আজগরের ছেলে বেলায়েত হোসেন (৪৫), বছির উদ্দিন (৪৩), একই এলাকার ময়েজউদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৫০) ও মূল আসামি বেলায়েত হোসেনের বাবা আলী আজগর। মৃত সোয়েব তালুকদার সুমন কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নের দয়থা গ্রামের আলতাফ মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, চলতি বছরের ১৪ জুন পল্লী চিকিৎসক শোয়াইব তালুকদার সুমন ফজরের নামাজ আদায় করতে গিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন ১৫ জুন সকালে উপজেলার আউলটিয়া কানাইগাড়া শ্মশান ঘাটের পাশে গাবগাছের নিচে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় ১৬ জুন নিহতের স্ত্রী খালেদা আক্তার বাদি হয়ে ৪জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৫/৭জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপরই আসামিরা গা ঢাকা দেয়। এ পর্যায়ে আসামিরা গত ৭ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে ৪২ দিনের জামিন নেন। লাশ উদ্ধারের পরপরই নিহতের পরিবার ও তার স্বজনরা হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

নিহতের স্ত্রী খালেদা আক্তার বলেন, ‘জমি-জমা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীকে তারা অপহরণ করে । এরপর তাকে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ গাছের নিচে বসিয়ে রাখে। প্রায় ৩মাস অতিবাহিত হলেও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বের হয়নি। এঘটনায় কোনও আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শুনেছি আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছে। আসামিরা যাতে উচ্চ আদালতের জামিন মেয়াদ শেষে নি¤œ আদালত থেকে পূনরায় জামিন না পান এজন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানান।

বাংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাসমত আলী জানান, নিহত শোয়াইব তালুকদার সুমন আমার পূর্ব পরিচিত ছিল। ছেলেটি অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। ওইদিন তাহাজ্জত নামাজ আদায় করে ফজরের নামাজ পড়তে গিয়ে সে নিখোঁজ হয়। পরদিন তার লাশ পাওয়া যায়। যেভাবে লাশটি পাওয়া গিয়েছিল তাতে কেউ তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ওই স্থানে লাশটি ফেলে গিয়েছিল। শুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দাবি জানাচ্ছি।

কালিহাতী থানার এসআই মো. রাজু বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামিসহ সকল আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। লাশের ময়নাতদন্তের রির্পোট এখনও আসেনি। এজন্য মামলার চার্জশিট ও মামলার তদন্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি হচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য