Wednesday, June 25, 2025
Homeদেশগ্রামটাঙ্গাইলের কারাগারে ফারুক হত্যা মামলার আরও এক আসামীর মৃত্যু

টাঙ্গাইলের কারাগারে ফারুক হত্যা মামলার আরও এক আসামীর মৃত্যু

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা, টাঙ্গাইলঃ
টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আরও এক আসামির কারাগারে মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে তার মৃত্যু হয়।

আজ শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আসামির নাম মো. সমীর (৪২)। তিনি শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার মৃত তফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ফারুক হত্যা মামলায় ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে টাঙ্গাইল কারাগারে ছিলেন।

এ বিষয়ে জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, রাত পৌনে ৯ টার দিকে সমীর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে কারা চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি হৃদরোগ জনিত সমস্যার কারণে ইতোপূর্বে একাধিকবার চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে যথানিয়মে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এরআগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ফারুক আহমদ হত্যা মামলার আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা (৪২) কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ। আনিসুল টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকার আমিনুল ইসলাম মোতালেবের ছেলে। ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজাকে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে। দুই দফা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর আনিসুল ওই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। রাজার স্বীকারোক্তিতেই হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সাংসদ আমানুর রহমান খান ওরফে রানাসহ তার ভাইদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এরপর থেকে তিনি টাঙ্গাইল কারাগারে ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুই জনকে গ্রেফতার করে। আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৬ সালের ফেব্রæয়ারিতে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অপর তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর কারাবাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এদিকে দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এরপর গত ১০ ফেব্রæয়ারি টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে জামিন দেন। পরবর্তীতে আবার ২৮ ফেব্রæয়ারি তার অন্তর্র্বতীকালীন জামিন বাতিল করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য