Tuesday, June 24, 2025
Homeআইন-আদালতচাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তার বিষয়ে দুদকের লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট

চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তার বিষয়ে দুদকের লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের কারণ অ্যাফিডেভিট আকারে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খানকে আগামী ৮ মার্চের মধ্যে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে চাকরিচ্যুত শরীফ উদ্দিনের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে চিঠি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর বরাবর চিঠিটি প্রেরণ করা হয়। আদালতে দুদক কর্মকর্তার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী এ চিঠি প্রেরণ করেন। তারা হলেন: অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, রেজওয়ানা ফেরদৌস, জামিলুর রহমান খান, উত্তম কুমার বণিক, মুস্তাফিজুর রহমান, মো: তারেকুল ইসলাম, আহমেদ আব্দুল্লাহ খান, সৈয়দ মোহাম্মদ রায়হান, মো: সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নোয়াব আলী। পরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি চিঠির বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

চিঠিতে বলা হয়েছিলো, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদক কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ২০০৮ এর ৫৪(২) বিধি অনুযায়ী উপ সহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। শরীফ উদ্দিন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় পটুয়াখালীতে উপ-সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার আগে সাড়ে তিন বছর তিনি ছিলেন চট্টগ্রামে। সেখানে থাকাকালে কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণের সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা দুর্নীতির ঘটনায় ১৫৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন তিনি, যেখানে অ্যাডমিন ক্যাডার ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও ছিলেন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক, সেসব মামলার বাদী ছিলেন শরীফ। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা সনদ দেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচিত হন শরীফ উদ্দিন।

এতে আরও বলা হয়, অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েও তদন্ত করেন শরীফ। পরে অভিযোগের ‘সত্যতা পেয়ে’ কেজিডিসিএল এর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সাবেক বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজনকে আসামি করে ২০২১ সালের ১০ জুন মামলা করেন শরীফ। এরপর আলোচিত মামলা দায়েরের পর চট্টগ্রাম থেকে শরিফ উদ্দিনকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। সবশেষে জীবননাশের হুমকি পাওয়ার ১৬ দিনের মাথায় শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হল। তাই হাইকোর্ট রুলসের ১১ক এর বিধি ১০ অনুযায়ী প্রেরিত চিঠিতে শরীফ উদ্দিনের ঘটনা নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শাতে এবং শরীফ উদ্দীনের জীবনের নিরাপত্তা বিধানের নির্দেশনা চাওয়া হয়ে। পরে চিঠিটি জমা রেখে এ বিষয়ে রিট দায়েরের পরামর্শ দেন হাইকোর্ট। এরপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চেয়ে রিট দায়ের করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য