শাহীন কামাল
চলমান লকডাউনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ৫ আগষ্ট। ঈদকে সামনে রেখে লকডাউন কয়েকদিনের জন্য স্থগিত থাকলেও ঈদের একদিন পরেই শুরু হয় এই ধাপের লকডাউন।
এবারের লকডাউনের পূর্বে কঠোর লাগিয়ে বেশ জোড়ালো করার চেষ্টা করা হয়েছে যা কিনা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি আর জেল-জরিমানায় প্রমাণ করে। ঈদযাত্রার ঘরমুখো মানুষকে একপাশে আটকে রাখার জন্য ঈদের পরদিনই লকডাউন শুরু হয়েছে। এতে যারা নিতান্ত ঢাকা শহরে থাকবেনা কিংবা থাকতে পারবেনা তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক পরিমাণ টাকা খরচ করে গ্রামে পৌঁছেছে।
জীবন আর জীবিকার টানাপোড়েন হিসাব নিয়ে আলোচনা শুরু সেই করোনাকালীন সময়ের শুরু থেকেই। সে বিতর্কে কে জিতবে সে হিসেবের বাইরে আলোচনায় এসেছে বারবার অর্থনৈতির চাকা নিয়ে। এ হিসেবের মাঝেই খেয়ে না খেয়ে মানুষ ৫ আগষ্টের হিসেব করছিল। ঢাকামুখো মানুষজন দিন গুনছিল ঢাকা ফেরার। বিশেষজ্ঞ কমিটি অবশ্য চলমান লকডাউন ৫ তারিখের পরে আরও ১০ দিন বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। সরকার থেকে বলা হয়েছে, লকডাউন আর বাড়ানো হবেনা। আজ হঠাৎ করে ঘোষণা করা হয়েছে ১ আগস্ট রোববার থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা খুলছে।
শিল্পকারখানা খোলা নিয়ে আলোচনা নয়। সরকার দেশের মানুষের জীবনের দিকে যেমনি, তেমনি তাকাতে হবে অর্থনৈতিক বিষয়েও। বিদেশের সাথে ব্যবসা বানিজ্য বিষয়েও যথেষ্ট মনোযোগ দিতে হবে। হয়তো সেদিন বিবেচনা করে কলকারখানা খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আমাদের শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের প্রায় সকলেই গ্রামে বাস করে। ঈদকে সামনে রেখে কঠোর লকডাউনে খুবই অল্পসংখ্যক ছাড়া সকলেই গ্রামে চলে গিয়েছিল। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে হয়তো এমনটাই চাওয়া হয়েছে যে, যারা গ্রামে যাবে তারা ১৪ দিন শেষ করেই শহরে ফিরবে। আজ হুট করে এই সিদ্ধান্তে হাজার হাজার শ্রমিক চাকুরী বাঁচাতে লকডাউনের বাঁধা অতিক্রম করে ঢাকা রওয়ানা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছুতেই তাদের রোধ করতে পারবে না কারণ সেই জীবীকার প্রশ্ন। এত এত শ্রমিকরা শুধু নিজেরাই নয়, একএকজনের সাথে একএক পরিবার। সেই পঞ্চগড় কিংবা ভোলার মনপুরা থেকে শুরু হবে এই যাত্রা। পথিমধ্যে তাদের গুনতে হবে বহুগুণ টাকা আর সীমাহীন ভোগা। এত এত মানুষের ঢাকা ফেরা তো বৈধ হয়ে গেলো তাহলে! করোনা মহামারির এই ভয়াবহতার মধ্যে অনেক সংখ্যক লোকজনকে যাতায়াত করানো ঠিক হবে তো? তাহলে কীভাবে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত চলমান কঠিন লকডাউন চলবে?