Monday, June 23, 2025
Homeবাণিজ্যকাঁচামরিচে সর্বোচ্চ ডিমের হালি ৫০ টাকা

কাঁচামরিচে সর্বোচ্চ ডিমের হালি ৫০ টাকা

সপ্তাহের ব্যবধানে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা বেড়ে কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকায়। প্রতি ডজন (১২ পিস) ফার্মের ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা, সাত দিন আগে ছিল ১২৫ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা, আগে ছিল ১৬০ টাকা।

তেলের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের চাল, আটা-ময়দা ও ভোজ্যতেল, শুকনা মরিচ, আদা-রসুন, চিনি ও এলাচ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরানবাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৭০-৭২ টাকা, তেলের দাম বৃদ্ধির আগে ছিল ৬৬-৬৮ টাকা। বিআর ২৮ জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকায়, আগে ছিল ৫০ টাকা। এছাড়া মোটা জাতের চালের মধ্যে স্বর্ণা চাল বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা, আগে ছিল ৪৬ টাকা।

দাম বৃদ্ধির কারণ নিয়ে জানতে চাইলে কাওরানবাজারের মদিনা রাইস এজেন্সির মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ১০ টনের ট্রাক আনতে খরচ পড়ত ২৪ হাজার টাকা। তেলের দাম বৃদ্ধির পর ২৯ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। ফলে এই বাড়তি টাকা চালের দামের ওপর পড়েছে।

অথচ হিসাব কষে দেখা যাচ্ছে, ১০ টনের ট্রাক ভাড়া ৫ হাজার টাকা বাড়লে প্রতি কেজি চালে ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা। অথচ প্রতি কেজি চালে ক্রেতার কাছ ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে বাড়তি নেওয়া হচ্ছে ৪-৫ টাকা করে।

বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। রাজধানীর কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. কাজল বলেন, কাঁচামরিচের সরবরাহ কম ও পরিবহণ খরচ বেড়েছে। তাই প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সরবরাহ বাড়লে ও পাইকারি বাজারে দাম কমলে খুচরা বাজারে দাম কমবে।

রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ১৬০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা, সাত দিন আগেও ছিল ১২৫ টাকা। হালি পড়ছে ৫০ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারে ডিম কিনতে আসা মো. সালউদ্দিন বলেন, বাজারে সব কিছুর দাম বাড়তি। ডিমের দামও বাড়তে শুরু করেছে। হালিতে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগির দামও হু হু করে বাড়ছে। বাজারের ডিম বিক্রেতা মো. মকবুল বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছে। আবার সেই ডিম আনতে পরিবহণ খরচ ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বেড়েছে। যার কারণে মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে।

রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকায়, সাত দিন আগে ছিল ৪২ টাকা। প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হয়েছে ৬২ টাকা, আগে ছিল ৫৮ টাকা। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা, আগে ছিল ৮৮০ টাকা।

প্রতি লিটার বোতল সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১৯০ টাকা, আগে ছিল ১৮৮ টাকা। প্রতি কেজি দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩৪০ টাকা, আগে ছিল ৩২০ টাকা। আমদানি করা আদা বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা, ৭ দিন আগে ছিল ১১০ টাকা। প্রতি কেজি আমদানি করা রসুন ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকা, যা আগে ৮০-৮২ টাকা ছিল।

হিলি বন্দর দিয়ে দুদিনে এলো ১৯৫ টন কাঁচামরিচ : হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচামরিচের আমদানি বেড়েছে, সেই সঙ্গে পাইকারি বাজারে কমেছে ভারতীয় কাঁচামরিচের দাম। দুই দিনে ভারতের ৫২ ট্রাকে প্রায় ১৯৫ টন কাঁচামরিচ আমদানি হয়েছে এ বন্দর দিয়ে। ফলে দুদিনের ব্যবধানে পাইকারি কেজিতে দাম ১০ টাকা কমে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমাতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি অব্যাহত থাকলে আরও দাম কমে যাবে।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর রশিদ বলেন, ভারত থেকে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২৮ টাকা শুল্ক দিয়ে আমদানি করা হচ্ছে। আমদানিতে শুল্ক কমানো হলে দাম আরও কমবে। হিলি বাজারের কাঁচামরিচ বিক্রেতা বিপ্লব শেখ বলেন, ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি অব্যাহত থাকায় খুচরা বাজারেও কমতে শুরু করেছে দাম। কেজি প্রতি ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড সব সময় প্রস্তুত রয়েছে যেন কোনো কাঁচা পণ্য নষ্ট না হয়। পচনশীল পণ্য দ্রুত খালাস করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতে আমদানিকারকদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে পানামা পোর্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য