
বাংলাদেশকে প্রকৃতির এক লীলা ভূমি বলা যেতে পারে। বাংলাদেশ অফুরন্ত সম্ভাবনার দেশ। এখানকার মাটিতে যা-ই রোপন করা হয় তা-ই ফলে। এই দেশ অনেক আগেই এগিয়ে যেত কিন্তু সঠিক দিকনির্দেশনার অভাব ছিল। আল্লাহর অসিম রহমতের ফসল আমাদের একমাত্র বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মোডেল হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
একদিন হেনরী কিসেঞ্জার বাংলাদেশেকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিলে। আজ বাংলাদশে তাঁর সেদিনের কথাকে ভুল প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে। বাঙ্গালী জাতি প্রমান করে দেখিয়ে দিলো বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। বাংলাদেশও পারে। সেদিনের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ অনেক তফাৎ। সেদিন যুদ্ধবিদস্ত সবেমাত্র একটি স্বাধীন দেশ। খাদ্য ছিল না, পানি ছিল না, বস্ত্র ছিল না, ঘর ছিল না, রাস্তা ছিল না, আলো ছিল না, সেতু ছিল না ছিল না রেল পথ, ছিল না নৌপথ। ছিল না বিমান। পাক হানাদারের কালো থাবায় সবই ক্ষতি সাধিত হয়েছিল।
আবার শুরু হয়েছিল ভিতরের-বাহিরের ষড়যন্ত্র। ঐ সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে জাতির জনক মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশ পুর্ণগঠন করতে সক্ষম হয়েছিল এবং বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে স্থান করে নিয়েছিল। দেশ এগিয়ে যাওয়ার পর ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে থাকেনি। খুনি খন্দকার মোস্তাকের নেতৃত্বে একদল কা-পুরুষ খচিত উগ্র, উচ্চাবিলাসি, রাতের অন্দকারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পুরো পরিবারকে শহীদ করে। খুনিরা এখানেই থেমে থাকেনি জেল খানায় গিয়ে জাতিয় তিন নেতাকে নির্মমভাবে খুন করেছিল। খুনি ও ষড়যন্ত্রকারী চেয়েছিল বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ চিরতবে মুছে ফেলবে কিন্তু তা সম্ভব হয়নি এবং হবেও না। ইনশাআল্লাহ।
আজকের উন্নয়নের রুপকার জাতির জনকের উত্তরসুরী, তাঁরই সুযোগ্য কন্যা, দেশরত্ন, মাদার অব হিউমিনিট, গণমানুষের অধিকারের প্রতিক, জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং সতের কোটি মানুষের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সঠিক দিকনিদের্শনায় আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
এই উন্নয়নের ধারাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য আমাদেরকে সুসংগঠিত হতে হবে। আমাদেরকে ন্যায়-নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যাবো।
আমাদের বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে খুবই ছোট একটি দেশ। যার আয়তন মাত্র ১,৪৭,৬১০ (ছিটমহলসহ) বর্গমিটার। এই ক্ষুদ্র আয়তান বেষ্টিত দেশে আনুমানিক বিশ কোটি মানুষের বাস। দিন দিন জন সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মানুষ দিন দিন নিত্য নৈমিত্তিক বাড়ী ঘর নির্মাণ করে যাচ্ছে। ফলে ফসলি জমি হারিয়ে যাচ্ছে। এইভাবে বাড়ী ঘর তৈরীর কারণে আগামী ত্রিশ চল্লিশ বছরের মধ্যে দেশে কোন ফসলি জমি থাকবে না।
বিশ্বে অনেক দেশেই আজ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে নতুন নতুন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন। তারা শহর, উপশর এমনকি গ্রাম-গঞ্জে পর্যন্ত বাড়ী করার উপর করারোপ জারি করেছেন। যেখানেই বাড়ী নির্মাণ করা হবে সেখানেই সরকারী নিয়ম-কানুন মেনে বাড়ী করতে হবে। অর্থাৎ যত্রতত্র বাড়ী ঘর নির্মাণ করা যাবে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অনুমতি সাপেক্ষে বাড়ী নির্মাণ করতে হবে।
বিশ্বের কৃষি প্রধান দেশগুলোতে সমিতির মাধ্যমে কৃষি করা হয়ে থাকে এবং সরকারী খরচে গ্রাম ভিত্তিক কৃষকের জন্য বহুতল বিশিষ্ট বিল্ডিং তৈরী করে দেয়া হয় এবং উক্ত বিল্ডিংয়ের সমুক্ষভাগে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করনের জন্য মাঠ তৈরী করা হয়। গ্রামবাসী মিলে-মিশে একই ছাদের নীচে বসবাস করেন এবং কৃষি ফসল সংরক্ষণ করেন। ফলে তাদের উৎপাদিত ফসল নষ্ট হয় না, নষ্ট হয় না তাদের কৃষি জমি এবং একই স্থান থেকে উৎপাদিত ফসল শুকিয়ে গোলাজাত করা হবে। অধিক ফসল উৎপাদন করতে পারেন। একে অপরের সহায়ক এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চাষাবাদ করে দেশ ও জাতির উন্নয়নে অগ্রনী ভুমিকা রাখতে পারে।
পরিশেষে, আসুন সবাই স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, সততা ও নৈতিক প্রজ্ঞার সাথে কাজ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কৃষি জমি বাঁচিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে এক সাথে কাজ করতে পরি।
লেখকঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম। ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয়ে একান্ত সচিব, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ, ঢাকা, বাংলাদেশ।