Tuesday, June 24, 2025
Homeঅপরাধআরশাদুল ঢাকা মেডিক্যালে, মাথার মগজ সাভারে

আরশাদুল ঢাকা মেডিক্যালে, মাথার মগজ সাভারে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধ :
পুরো মাথায় ব্যান্ডেজ। প্রতিবেশীদের আঘাতে আরশাদুলের মাথায় লেগেছে ৪৪টা সেলাই। নিরাপত্তার কারণে ব্যান্ডেজের ওপর লেখা হয়েছে ‘মাথায় হাড় নাই, চাপ দিবেন না’। আরশাদুলের চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তবে তার মাথার মগজ রাখা আছে সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিং অ্যান্ড বায়োম্যাটেরিয়াল রিসার্চ সেন্টারে। আরশাদুল একটু সুস্থ হলে তার মগজ প্রতিস্থাপন করা হবে বলে পরিবারকে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জীবন সংকটে থাকা আরশাদুল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের অরণ্যপাশা গ্রামের মঞ্জিল মিয়ার ছেলে। তুচ্ছ ঘটনায় ছোট ভাইয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আরশাদুলের ওপর হামলা চালায় প্রতিবেশীরা।
গত শনিবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলায় আরো ১০ জন আহত হয়। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাঁচ দিন ধরে ঢাকা মেডিক্যালে চলছে আরশাদুলের চিকিৎসা। তিনি এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানায়, বাড়ির সামনে একটি জলাশয়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে আরশাদুলের ছোট ভাই আহাদের সঙ্গে প্রতিবেশী নবী হোসেনের ছেলে জুনায়েদের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে মারামারির ঘটনাও ঘটে। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়। কিন্তু জেদ জমিয়ে রাখে জুনায়েদ। শনিবার দুপুর ২টার দিকে আরশাদুলকে একা পেয়ে বড় ভাই সুজনকে সঙ্গে নিয়ে হামলা চালায় জুনায়েদ। এ সময় আরশাদুলকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
গুরুতর অবস্থায় আরশাদুলকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। দায়ের কোপ ও শাবলের আঘাতে আরশাদুলের মাথার খুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বুধবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যালে অবস্থান করা আহত আরশাদুলের বাবা মঞ্জিল মিয়া বলেন, ‘তারা আমার নির্দোষ ছেলেকে নির্মমভাবে কুপিয়েছে। এতে ছেলের মাথার খুলি উপড়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরশাদুলের চিকিৎসা চলবে। সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিং অ্যান্ড বায়োম্যাটেরিয়াল রিসার্চ সেন্টারে কিছু মগজ জমা রাখা হয়েছে। আরশাদুল সুস্থ হলে অপারেশনের মাধ্যমে মগজ ভিতরে প্রবেশ করে খুলি প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে এতে তিন মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।’

এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা বাড়ি ছেড়ে পলাতক। তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জুনায়েদের এক আত্মীয় বলেন, ‘এটা খুবই ন্যক্কারজনক কাজ হয়েছে। যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে কেউ আসেনি। তবে খোঁজখবর নেব। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য