পবিত্র শবেমেরাজ আজ। এই রাতেই প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মহান আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসাবে আরশে আজিমে আরোহণ করেন। তখন তিনি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করেন ও পৃথিবীতে ফিরে আসেন। উম্মতের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে আসেন। তাই হিজরি রজব মাসের ২৬ তারিখ রাতের তাৎপর্য মুসলিম জাহানের কাছে অপরিসীম। পবিত্র ধর্ম ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব আছে। কেননা, এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয়টি বা নামাজ মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক বা ফরজ হয়।
আরবি শব্দ ‘লাইলাতুল’ অর্থ রাত আর ‘মেরাজ’ মানে ঊর্ধ্বগমন। মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, পবিত্র এ রাতে মহানবি (সা.) মহান আল্লাহতায়ালার রহমতে প্রথমে বোরাক নামের বাহনে করে মক্কার কাবা শরিফ থেকে ফিলিস্তিনের জেরুজালেমে অবস্থিত বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদে যান। সেখানে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। পরে ঊর্ধ্বলোকে গমন করেন বিশ্বনবি। প্রতিটি আসমানে হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে বিশিষ্ট নবিদের সঙ্গে মহানবি (সা.) সালাম ও কুশলাদি বিনিময় করেন। তারপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় উপনীত হন। এ পর্যন্ত হজরত জিবরাইল (আ.) তার সফরসঙ্গী ছিলেন। এরপর থেকে মহানবি (সা.) একা রফরফ নামক বিশেষ বাহনে চড়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হন। আল্লাহতায়ালার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ পালন করা হয়। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ আদায়সহ নানা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে এ রাতে আল্লাহর রহমত কামনা করে থাকেন। অনেকেই আগে-পরে রোজা রাখেন।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন শরিফের সুরা বনি ইসরাইলের শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতের বেলায় মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করালেন, যার চতুর্দিকে আমার রহমত ঘিরে রেখেছেন-যেন আমি কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই।’