Saturday, June 28, 2025
Homeদেশগ্রামঅপহরণের এক বছর পর ফটিকছড়ির জঙ্গলে মিলল এনজিও কর্মকর্তার কঙ্কাল

অপহরণের এক বছর পর ফটিকছড়ির জঙ্গলে মিলল এনজিও কর্মকর্তার কঙ্কাল

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে অপহরণের এক বছর পর পাহাড়ি অঞ্চলের ৫০ ফুট গভীর খাদে এক এনজিও কর্মকর্তার লাশের কঙ্কালের সন্ধান মিলেছে। ওই  এনজিও কর্মকর্তার নাম হেলাল উদ্দিন (৪৩)।

উপজেলার বাগানবাজার ইউনিয়নের নূরপুর এলাকার গহীন জঙ্গলের গভীর খাদ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ কঙ্কাল উদ্ধার করে।

হেলাল উদ্দিনের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলবে। তার পিতার নাম আবদুল গণি।

এর আগে বুধবার বিকালে অপহরণের সঙ্গে জড়িত মো. বিল্লাল হোসেন নামে একজনকে রামগড় থেকে গ্রেফতারের পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে নিয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে পিবিআই টিম। শুরু করে লাশ উদ্ধারের অভিযান।

জানা গেছে, তথাকথিত কোটি টাকা মূল্যের তক্ষক কমমূল্যে বিক্রির নাম করে গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাবুল সিকদার (৪২) নামে এক ঠিকাদার ও এনজিও সংস্থা সেতুবন্ধনের ব্যবস্থাপক হেলাল উদ্দিনকে কৌশলে ফটিকছড়িতে নিয়ে আসে অপহরণকারীরা। তাদের দুজনের বাড়িই ঢাকায়।

ঢাকা থেকে তক্ষকের জন্য ফটিকছড়িতে আনার পর তাদের অপরহণ করে গভীর জঙ্গলে নিয়ে আটকে রাখে। অপহরণকারীরা তাদের পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ দাবির কয়েক দিনের মাথায় অপহরণকারীরা বাবুলকে মুক্তি দিলেও মুক্তিপণ না পাওয়ায় এনজিও কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনকে হত্যা করে। পরে লাশ ফেলে দেয়া হয়েছিল দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের ৫০ ফুট গভীর খাদ বা গর্তে।

হত্যাকাণ্ডের এক বছরের মাথায় জড়িত একজনকে পিবিআই আটকের পর বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য।

এ ঘটনায় ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি হলেও দীর্ঘদিন হেলালের কোনো খোঁজ মিলছিল না। শেষপর্যন্ত ছদ্মবেশী পিবিআই সদস্যদের ফাঁদে ধরা দেয় মো. বিল্লাল নামে স্থানীয় এক তরুণ, সে অপহরণকারী দলের সদস্য ছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. বিল্লাল এনজিও কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনকে হত্যা ও লাশ গুমের তথ্য দেয়ার পর শুরু হয় উদ্ধারের তৎপরতা। দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টার অভিযানে ৫০ ফুট গভীর খাদটিও খনন করতে হয়। ওই খাদেই পাওয়া যায় হতভাগা হেলালের কঙ্কাল।

বাগানবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুস্তম আলী বলেন, ঘটনাস্থলটি খুবই দুর্গম এলাকায়। হেঁটে ওই এলাকায় পৌঁছেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেখানে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। গভীর খাদে নামতে গিয়ে অভিযানকারী দল দেখা পায় বিষধর সাপের। পরে আগুন দিয়ে সেই সাপ তাড়ানো হয়।

পিবিআই চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি আমাদের কাছে স্বীকার করেছে যে, সে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তার স্বীকারোক্তিতে লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

ভুজপুর থানার ওসি শেখ আবদুল্লাহ বলেন, কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। এখন মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।

২০০৪ সালে চট্টগ্রামের আলোচিত বিএনপি নেতা অপহৃত জামাল উদ্দিন আহমদের কঙ্কালও উদ্ধার করা হয়েছিল ফটিকছড়ির জঙ্গল থেকে। অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল তার পরিবারের কাছে। বিপুল অঙ্কের মুক্তিপণ দেয়ার পরও জামাল উদ্দিন আহমদকে হত্যা করেছিল অপহরণকারীরা। তবে ওই ঘটনায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য