
মোঃ রফিকুল ইসলাম
২০১৯ সালের পারফর্মিং আর্টের শিল্পীরা রাজধানীর হাতিরঝিলে যা দেখিয়েছ তা দেশবাসীকে আহত করেছেন। কারণ পবিত্র কোরআনুল কারিমে স্বয়ং আল্লাহ নিজেই উল্লেখ করেছেন যে, আঠারো হাজার মাকলুকাত সৃষ্টি করা হয়েছে। তন্মধ্যে মানুষ জাতিকে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে কারোর বিন্দুমাত্র সন্দেহ বা অবিশ্বাস নেই। নিঃসন্দেহে সবাই বিশ্বাস করেন। মহান আল্লাহ-তায়ালা এও ঘোষনা দিয়েছেন যে, এই পৃথিবীতে যা-কিছু আছে বা আসবে সবই মানব কল্যাণে।
দেখুন পৃথিবীতে যা আবিষ্কার হয়েছে বা আবিষ্কারের অপেক্ষায় সবই মানুষ কর্তৃক আবিষ্কৃত। মানুষ ছাড়া কোন প্রাণী কিন্তু আবিষ্কার করেনি বা করতেও পারবে না। মানুষই একমাত্র প্রাণী যারা প্রতিনিয়ত গবেষণা করেন এবং গবেষণালব্ধ থেকেই বিশ্বে যা কিছু পাওয়া যায় সবই মানুষের আবিষ্কার এবং মানুষের কল্যাণের জন্য নিহীত। সুতরাং মানুষ জাতিকে কোন ভাবেই হেয়প্রতিপন্ন করা যাবে না। নিঃসন্ধেহে মানুষই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মাকলুকাত।
আপনি শিল্পি হতে পারেন আপনিও মানুষ। মানুষ জাতি হিসাবেই বুদ্ধিমত্তায় আপনাকে সকল প্রাণীর উপর শ্রেষ্ঠ করে দিয়েছেন। আপনার কলমের তুলির মাধ্যমে বিভিন্ন কিছু আর্ট করে প্রদর্শন করতে পারেন। আপনার শিল্পের দ্বারা প্রদর্শিত বস্ত মানব জাতির বাহ্যিক প্রয়োজনে আসতে পারে। কারণ বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত গবেষণা করে যাচ্ছেন এবং তাদের গবেষণা লব্ধ মানব জাতির কল্যাণেই আসছে এবং আপনার পারফর্মিং আর্টের মাধ্যমে যা কিছু মানুষকে বুঝানো হচ্ছে তাও মানব জাতির কল্যাণে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন (২৬/১২/২০১৯) এবং যে ছবিগুলো ভাইরাল যা নিম্নরূপ (গড় রেটিং ৫.০/৫)৪টি ভোট গৃহিত হয়েছে। অতএব আপনার পারফরিমং-এর নমুনাঃ

১৯৬৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে এই ধরণের পারফর্মিং আর্ট প্রথম প্রকাশ্যে দেখা যায় অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার রাস্তায়। ভ্যালি এক্সপোর্ট ও পিটার উইবেল এই পারফর্মিং আর্টে অংশ নেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় একই ধাঁচের এই পারফর্মিং আট দেখা গেছে বিশ্বের বিভিন্ন শহররের রাস্তায়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে হাতিরঝিলে করা পারফর্মিং আর্টের শিল্পীরা হলেন টুটুল চৌধুরী ও সেঁজুতি। এ নিয়ে ইতিবাচক-নেতিবাচক দুই ধরনের প্রতিক্রিয়াই পাওয়া গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস বুকে। নেটিজেনদের অনেকেই ’ফ্রেম পোর্টফোলিও অফ ডগডনেস’ শিরোনের ওই পারফর্মিং আর্টের ছবি পোষ্ট করেছেন ফেসবুকে।
সেঁজুতি এটিকে ’সমাজতাত্বিক’ ও ’আচরণমূলক’ কেসস্ট্যাডি হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেইন্টিং ও ড্রয়িংয়ের শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বলেছেন কার্টুনে যেমন বিভিন্ন প্রাণীকে মানুষের মতো কথা বলা ও আচরণগতভাবে দেখানো হয় তেমনি এখানে মানুষকে প্রাণী চরিত্রে দেখানো হয়েছে। তিনি আরো জানান এই ছবিতে একজন নারী একজন পুরুষকে গলায় রশি বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বা আরো ভালো কোন সামাজিক অবস্থার চিত্র দেখায় না। বরং সমাজ আমাদের ওপর যে সিস্টেম চাপিয়ে দিয়ে সেটাই ফুটে উঠেছে। আমরা যে কাজটি করেছি এই কাজের প্রতি দৃষ্টভঙ্গি এবং এই কাজটাকে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিয়েছে সেটাই আমরা দেখতে চেয়েছি।
মনে রাখতে হবে মানুষ পারফর্মিং করতে গিয়ে বা আবিষ্কার করতে গিয়ে এমন কিছু আবিষ্কার করে ফেলবে যা বিশ্ব পরিক্রমায় বা বিশ্ব শ্রষ্টার সৃষ্টি জগতে আঘাত হানবে। দরুণ বিগত কয়েক বছর পূর্বে মানুষ ভেড়া থেকে কেøান করে ভেড়া বানিয়েছিল। তবে সেটা দেশের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। এখানে প্রশ্ন থেকে যায় যে, মানুষ অস্তিত্ব থেকে ক্লোনের মাধ্যমে নতুন একটা আবিষ্কার করে। কিন্তু মহান আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন অস্তিত্ব বিহীন বস্তু থেকে। সুতরাং আপনার পারফর্মিং আর্ট থেকে হাতিরঝিল যে পারফর্মিং দেখিয়েছেন এটা ঠিক করেছেন বলে আমার মনে হচ্ছে না।
এছাড়াও আপনি পারফর্মিং দেখাতে গিয়ে একজন পুরষ জাতিকে গলায় রশি বেঁধে একজন মহিলা দিয়ে টানছেন। আমি মনে করি এটা পুরষ জাতিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই আপনি করেছেন। আপনার দীর্ঘদিনের লুকায়িত ক্ষোভ আপনি এভাবে প্রকাশ্যে দিবালোকে আদর্শবান এবং শ্রেষ্ঠ জাতি মানব পুরষ জাতির গলায় রশি দিয়ে একটা অবলা প্রাণী যেমন: কুকুর, বিড়াল বা যে কোন চার পা জন্তুর মতো রাস্তায় টানছেন তাও আবার সেটা করিয়েছেন একজন নারী দিয়ে।
আপনি আপনার এই কৃতকর্মের দ্বারা যেমন নিজেকে ছোট করেছেন, ছোট করেছেন পুরো নারী জাতিকে এবং সর্বপরি একজন পুরষকে জাতির কাছে প্রদর্শিত করেছেন চার পা জন্তুর ন্যায়। যেহেতু আপনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পেইন্টিং ও ড্রয়িংয়ের শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দিয়েছেন সেহেতু পৃথিবীতে অনেক কিছুই পেইন্টিং ও ড্রয়িং করা মত বস্ত উপাদেয় রয়েছে আপনি ইচ্ছা করলে সে সকল বস্তু বা উপদেয় দিয়ে পারফমিং করা যেত। আশা করি সমাজের সকল শ্রেনীর মানুষ হয় নারী বা পুরষ উভয়কেই হেয় প্রতিপন্ন করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।