করোনা আঘাত হেনেছে জাতীয় সংসদেও। চলমান সংসদের একশ’রও বেশি সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সংসদ সচিবালয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে এই তথ্য।
জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে সর্বশেষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন রাজশাহীর এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। তাকে নিয়ে মোট ১০৯ জন করোনায় আক্রান্ত। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে মহামারিতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে একজন করে সংসদ সদস্যের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর জুনে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ জনে। জুলাইয়ে ৬ ও আগস্টে ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ৫ জন করে শনাক্ত হলেও নভেম্বরে সর্বোচ্চ ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয় । এরপর টানা তিন মাস এটি কমতে থাকে। ডিসেম্বরে ৮ জন, জানুয়ারিতে ৩ ও ফেব্রুয়ারিতে ৬ জন সংসদ সদস্যের করোনা শনাক্ত হয়। এ বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলে ১৪ জন সাংসদ আক্রান্ত হন এতে। আর চলতি মাসে ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ১৩ জুন মারা যান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি মোহাম্মদ নাসিম। একই দিনে মারা যান টেকনোক্র্যাট কোটায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ। আর জুলাইয়ে মারা যান নওগাঁ-৬ আসনের এমপি ইসরাফিল আলম। সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল মারা গেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কুমিল্লা-৫ আসনের এমপি আবদুল মতিন খসরু। এর আগে গত মাসে মারা যান সিলেট-৩ আসনের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী।
সংসদ সচিবালয় সূত্র বলছে, প্রতিটি সংসদ অধিবেশনের আগে সবার করোনা পরীক্ষা করাটা বাধ্যতামূলক। এতে দেখা গেছে, উপসর্গ ছাড়াও অনেকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ সংসদ অধিবেশন বসে ১ এপ্রিল। এর আগে করোনা নমুনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে বেশ কয়েকজন শনাক্ত হন। এ ছাড়া ১৭ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগে বাধ্যতামূলক নমুনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে কারও কারও করোনা শনাক্ত হয়। এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ২৫ মার্চ নমুনা পরীক্ষা করার পর ২৬ মার্চ করোনা শনাক্তের তথ্য পান গাজীপুর-৪ আসনের সাংসদ সিমিন হোসেন রিমি।
নির্বাচনী এলাকায় নিয়মিতভাবে করোনায় আক্রান্তদের পাশে থেকে এক বছর ধরে কাজ করেছেন তিনি। সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত অন্তত ১০৯ জন সংসদ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন মারা গেছেন। আর মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ সদস্য, এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ১২ জন।