Tuesday, June 24, 2025
Homeমন্তব্যযে সচেতনতা সাবধানতা আনায়নে সমাজপতিদের একযোগে কাজ করতে হবে।

যে সচেতনতা সাবধানতা আনায়নে সমাজপতিদের একযোগে কাজ করতে হবে।

মোঃ রফিকুল ইসলাম

মোঃ রফিকুল ইসলাম

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে দলবদ্ধভাবে বাস করে। মানুষের জন্য রয়েছে, স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা, ধর্মীয় উপাশনালয়, হাট বাজার, খেলার মাঠ, রাস্তা-ঘাট, পুকুর, খাল বিল, নদী নালা, সমুদ্র, মহাসমুদ্র সবই মানুষের অব্যয়াচাড়ন। সকল শ্রেনীর সকল পেশার মানুষই এই সকল যায়গায় যাতায়াত করে একে অপরের বন্ধ-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, শুভাকাঙ্খী বনে যায়। অর্থাৎ কেউ কারো অপর নয়। কিন্তু তারপর কেন এত মারামারি, কাটাকাটি, ঝগড়া বিপদ অহরহ ঘটে যাচ্ছে। আমরা এর থেকে প্রতিকার চাই। এক কথায় আমরা সবাই মানুষ। সবার উপর মানুষ সত্য এই ছন্দে বিশ্বাস করে একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা। মনে রাখতে হবে আমরা কারো শত্রæ নই সবাই সবার বন্ধু, সবাই সবার চেনা মুখ। হয়ত কেউ আত্মীয় বা কেউ পাড়া প্রতিবেশী। এক কথায় আমরা সবাই মানুষ।

যেহেতু আমরা মানুষ সেহেতু সমাজের প্রতি আমাদের প্রত্যেকের সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। সমাজে সবার অবস্থা সমান নয়। কেউ আর্থিক সচ্ছলতা কেউ বা আর্থিকভাবে অক্ষম। যে যার দৃষ্টিকোণ থেকে নিরবে নিবৃত্তে সমাজের কাজ করে যাচ্ছে। কারোটা দৃশ্যমান কারোটা অদৃশ্য। সুতরাং সবাই সবার পক্ষ থেকে কিছু না কিছু করে পারিবারিক, সামাজিক বা জাতীয় প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন।

দুঃখের বিষয় একটা যায়গায় আমরা অসচ্ছতা, অসাবধানতা এবং অসচেতনতা হিসাবে কিছু কাজ করে ফেলি যাহা সমাজের কল্যাণ বয়ে আনে না বরং সমাজকে দৃষ্টিকুটু করে তুলে। অনেক সময় অসাবধানতায় মানুষের বড় রকম ক্ষতি সাধিত হয়। গতকাল সন্ধা ৭.৩০ শাহাবাগ মোড়ে গাড়ীর জ্যামে আটকা পড়ি দীর্ঘ সময় ধরে। আমি যাত্রীবাহি গাড়ীতে জালনার কাছে বসা, আমাদের পাশেই ছিল একটি নতুন চকচকে প্রাইভেট গাড়ী। ঐ গাড়ীটির চালকের পাশের সিটে বসা সাত আট বছরের একজন মেয়ে আর পেছনের সিটে বসা পয়ত্রিশ চল্লিশ বছরের একজন ভদ্র মহিলা। গাড়ীতে তারা কিছু খেয়ে খালি প্যাকেটগুলো জালানা খুলে রাস্তায় ফেলে দিতেই হঠাৎ মহিলার চোখে চোখ পড়ে গেল আমার। মহিলা যে গহির্ত কাজটি করেছেন আমাকে দেখে তার চোখে মুখে দুর্বলতার ছানি পড়ে গেল। তড়িৎ গতিতে গাড়ীর জালানা বন্ধ করে দিলেন।

প্রশ্ন হলো কেন আমরা অসচেতন থাকি, কেন আমরা অসাবধন থাকি। রাষ্ট্র কি শাহাবাগে এসে আমাকে বলবে গাড়ীর জালানা দিয়ে খালি প্যাকেটুগুলো রাস্তায় ফেলে দেয়। নিশ্চয়ই না আমরা আমরাই চলাচলে রাস্তা ঘাট নদী খাল বিল নিজের মনে করতে হবে। আমরা যেমন আমাদের বাসা বাড়ি পরিছন্ন রাখার চেষ্টা করি ঠিক তেমনি রাস্তা-ঘাটও সেই ভাবেই পরিছন্ন রাখার চেষ্টা করতে হবে। তবেই সমাজ তথা দেশ উন্নত হবে, জাতি পরিছন্ন শহর পাবেন। সবার জন্যই ভাল হবে।

পাঠক বন্ধুদের জন্য একটা ছোট গল্প মনে পড়ে গেল, গল্পটি হলো এক জমিদার একটা পুকুর খনন করে সমাজের সকলকে ডেকে বললেন দেখ আমাদের পুরাতন পুকুরগুলোতে পানি ভর্তি থাকে কোন পুকুরে দুধ নেই, চল এবার এই নতুন পুকুরে আমরা সবাই মিলে দুধ দিয়ে ভর্তি করি। জমিদারের সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নিলেন। রাত্রে এক এক জনের চিন্তা এক এক রকম। কেউ কেউ ভাবলেন আরে সবাইতো দুধ দিবেন আমি এক গøাস পানি দিয়ে আসি। সবাই এই রকম চিন্তা এক একজনে এক এক গøাস পানি পুকুরে ফেলে দিলেন সকাল বেলা অধির আগ্রহ নিয়ে সবাই পুপুর পাড়ে হাজির জমিদার সাহেবও আসলেন দেখলে পানি দিয়েই পুকুর ভর্তি। বিষয়টি হলো যদি আমরা মনে করি এটা ওটা সবই সরকার করবেন তাহলে এটা ভুল হবে। সবাই সবার পক্ষ থেকে সমাজের ভাল কাজগুলো করবো এবং সবাই সমাজ থেকে খারাপ কাজগুলো পরিহার করবো। তবেই দেশের মঙ্গল বয়ে আনবে উন্নত দেশের কাতারে দেশ সামিল হবে।

আজকে পাড়ায় মহল্লায় যে সকল অত্যাচার অবিচার পরিলক্ষিত হচ্ছে এটা কারা করছে সমাজেরই একজন, সমাজ থেকে তা দুর করতে হলে সমাজের পক্ষ থেকেই দায়িত্ব নিতে হবে। যিনি এই খারাপ কাজটি করে যাচ্ছেন প্রথমত তাকে বুঝাতে হবে, ভাল পথে ফিরে আসার ডাক দিতে হবে যদি সে ভালো পথে না আসে তাকে একঘরে করে রাখতে হবে এতেও যদি সে ভাল না হয় তাহলে তাকে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। এটাই সচেতনতা বা সাবধানতা। সমাজ থেকে দুর হলে গ্রাম থেকেও দুর হবে এরপর প্রতিটি উপজেলা, জেলা থেকে খারাপি কাজ বন্ধ হবে।

সমাজ থেকে তথা দেশ থেকে খারাপি কাজ দুর করতে হলে কে কার সন্তান বা কে কার আত্মীয় বা কে কোন দল করে সেদিকে তাকালে কখনই সমাজ তথা দেশ ও জাতি ভালো হবো। আসুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয় প্রায়ই কথাটি বলে থাকেন সন্ত্রাসীর কোন দল নেই, সন্ত্রাসীর কোন সমাজ নেই। সুতরাং আসুন আমরা সবাই এই গুরুত্বপূর্ণ ¯েøাগানে বিশ্বাস করি তবেই দেশ জাতির মঙ্গল বয়ে আনবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য