Thursday, June 26, 2025
Homeশিক্ষা সংবাদতজুমদ্দিনের মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

তজুমদ্দিনের মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়


স্টাফ রিপোর্টার:


ভোলার তজুমদ্দিনের উত্তর চাঁচড়া মোহাম্মদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও: মো. ছালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদ্রাসায় বরাদ্দের সোলার প্যানেল ও আইপিএস নিজ বাসায় নিয়ে ব্যবহারসহ ব্যাটারি বিক্রিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি নিয়োগের কথা বলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।


সরজমিনে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার জন্য ১২ টি সোলার প্যানেল বরাদ্দ থাকলেও সেখানে রয়েছে ১০টি। এমনকি সোলারের একটি আইপিএসও এবং ৬টি ব্যাটারি গায়েব মাদ্রাসা থেকে।


মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও: মো. ছালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নিয়োগের কথা বলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মো. ইলিয়াছ নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ২০১৩ সালে মাদ্রাসা এবতেদায়ী শাখায় শিক্ষক হিসেবে চাকরি দেয়ার কথা বলে আড়াই লক্ষ টাকা নেন অধ্যক্ষ। তবে সরকার থেকে ওই পদের শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আমি টাকা ফেরৎ চাইলে সে টাকা দিতে নানা বাহানা করতে থাকে অধ্যক্ষ ছালাউদ্দিন। এরপর গত ২০১৮ সালে আমার স্ত্রীকে মাদ্রাসার অফিস সহকারী পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে পূণরায় আবার চার লক্ষ টাকা দাবী করে। চাকরির জন্য মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছালাউদ্দিন ও উপাধ্যক্ষ মাও: নূরউদ্দিনের দাবী মত ওই টাকা তাদের প্রদান করি। এরপরও তারা আমাকে চাকরি না দিয়ে অন্য লোককে আরো মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চাকরিটি দিয়ে দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে আমি তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাকে কোনোভাবেই পাত্তা দিচ্ছে না। এরপর এবিষয়ে আমি মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি মাও: এম.এ আজিম উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ করি। অভিযোগের পরেও তিনি আমাকে কোনো ফয়সালা দিতে পারেননি।


এব্যাপারে মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি মাও: এম.এ আজিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন ইলিয়াছের টাকা ফেরৎ দিয়েছেন।


এসব অভিযোগের ব্যাপারে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও: মো. ছালাউদ্দিন বলেন, সোলারের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। পিআইও অফিস থেকে লোকজন এসে লাগিয়ে গেছে। সেখানে কি কি আছে তা আমার জানা নেই। টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে তিনি কিছু না বললেও তার ভাই ও মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাও: নূরউদ্দিন জানান, কারো থেকে চাকরি দেয়ার কথা বলে আমরা কোনো টাকা নেইনি।


তবে মাঈনুদ্দিন নামের ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষক বলেন, মাদ্রাসার সোলার ও আইপিএস নিজ বাসায় ব্যবহার করছেন অধ্যক্ষ ছালাউদ্দিন। ভয়ে তার অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষক কথা বলছেন না। আমরা এই অধ্যক্ষের এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবী জানাচ্ছি।


উত্তর চাঁচড়া মোহাম্মদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও: মো. ছালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে রয়েছে আরো অভিযোগ। ২০১৯ সালে মসজিদের টাকা আত্মসাৎ ও মসজিদের পাকা ঘাটলা ভাঙার দায়ে মামলা করেন মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাহাজান। ওই মামলায় আদালত গিয়ে ঘাটলা করে দেয়ার মর্মে জামিন পান তিনি। তবে শাহাজান জানান ঘাটলা করে দিলেও অধ্যক্ষ ছালাউদ্দিন মসজিদের সেই টাকা এখনো ফেরৎ দেননি।


উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া জানান, অভিযোগ পেয়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে ডেকেছি। তিনি বলেছেন মাদ্রাসায় যা বরাদ্দ ছিলো তা এখনও আছে। তারপরেও আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো।


অধ্যক্ষ ছালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের ব্যাপারে তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মরিয়ম বেগম বলেন, ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য