Monday, June 23, 2025
Homeঅপরাধটাঙ্গাইলের বাসাইলে ইউএনও’র বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

টাঙ্গাইলের বাসাইলে ইউএনও’র বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সেই কলেজ ছাত্রী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়। তদন্ত কমিটি এতে আংশিক সত্যতা পেয়েছে বলে জানতে পেয়েছি। এর ফলে ইউএনও মনজুর হোসেন আমাকে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছে। এতে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতা এবং মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছি। একই সাথে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিডিও দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এমনকি আমার ছবি এডিট করে নিজ এলাকায় ভূয়া সাংবাদিক পাঠিয়ে মিথ্যা নিউজ করে সামাজিকভাবে হেনস্থা করে যাচ্ছে। গত (২১ মে) আমি মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করি। আমি এসব আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করছি। আমি এর সঠিক বিচারের দাবি করছি।
তিনি আরো বলেন, প্রথমে মনজুর হোসেনের সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। বিগত ২০২১ সালের (২৮ জুলাই) খালার বাড়ি বাসাইল থেকে নিজ বাড়িতে আসার সময় মনজুর হোসেন (তখন বাসাইলের ইউএনও ছিলো) সাথে দেখা হয়। তখন লকডাউনের কারণে যানবাহন বন্ধ থাকায় আমার বাড়িতে যেতে সমস্যায় হচ্ছিলো। সে সময় মনজুর হোসেন আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা জানায়। করোনার সময় মোবাইল কোর্ট থাকাকালীন গাড়ি বহরে আমাকে তুলেন এবং ডিউটি শেষ করে তার অফিসে গিয়ে চা খেতে বলেন। আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তার সাথে যাই। তখন তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার কক্ষে নিয়ে আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেন। এতে আমি কান্নাকাটি করে থাকলে তিনি আমাকে তার তথ্য গোপন করে বিয়ের আশ্বাস দেয়। পরবর্তীতে ওই বছরের (৩ আগস্ট) টাঙ্গাইল শহরের এসএসএস রেস্ট হাউজে আমাকে রাখেন। পরবর্তীতে আমার বিয়ে ভেঙে দিয়ে (২২ আগস্ট) কুমুদিনী কলেজ সংলগ্ন পাউয়ার হাউজের পিছনে একটি বাসায় আমাকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে দিয়ে উঠান। আমার বাসা থেকে খোজাখুঁজি করে এক পর্যায়ে ভাড়া বাসায় এসে আমাকে নিতে চাইলে মনজুর হোসেন বলেন, আমাদের বিয়ে হয়েছে, তিন মাস পর কাগজ পাঠিয়ে দিবো। এরপর আমি বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে তিনি আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিয়ের কথা বলে মেডিকেল ভিসায় গত বছরে (২৪ সেপ্টেম্বর) আমাকে ভারতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে একটি অপারেশন করান। যদিও আমার কোন ধরণের শারীরিক সমস্যা ছিল না। কিন্তু তিনি আমাকে বলেছিলেন আমরা ভারতে গিয়ে বিয়ে করে সেখান থেকেই বাচ্চা নিয়ে দেশে আসবো।  তার আশ্বাসেই আমি ভারতে যাই। তবে সেখানে যাওয়ার পর তার ভিসা ও পাসপোর্টে দেখে আমি জানতে পারি সে বিবাহিত এবং ২টি কন্যা সন্তানের পিতা। তিনি আমাকে বিয়ের বিষয়টি গোপন করেছে।
১২ দিন ভারতে অবস্থান করে বিগত ২০২১ সালের (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশে আসি। এরপর তার সাথে আমার কোন প্রকার যোগাযোগ হচ্ছিলো না। তার বন্ধুর নিকট থেকে জানতে পারি তাকে বাসাইল থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলী করা হয়েছে। ওই বছরের (১২ জানুয়ায়ী) ঢাকার ধানমন্ডিতে তার সাথে আমার দেখা হয়। পরবর্তীতে মনজুর হোসেন আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলো। পরবর্তীতে আমি (২৬ জানুয়ারি) নিজ থানায় মামলা দায়ের করি। গত (৩ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রাণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেই। এর প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিন আমাকে ও মনজুন হোসনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে নিউজ প্রচারিত হয়। এর প্রেক্ষিতে গত (৯ এপ্রিল) তার কর্মস্থল থেকে তাকে ক্লোজ করা হয়। এরপর থেকে মনজুর হোসেন এলাকার মাদকাসক্তের সাথে হাত মিলিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক হ্যানস্থারও হুমকি দিয়ে আসছে। এমনকি আমার বিরুদ্ধেও মিথ্যা প্রণোগ্রাফী মামলাও দেয়া হয়। সেই মামলায় ২নং স্বাক্ষীর বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মাদক, চুরি, ডাকাতি, খুন ও নারী নির্যাতনের মামলা রয়েছে। আমি আমার পাপ্য অধিকার নিয়ে বেচে থাকতে চাই। আমি প্রধানমন্ত্রী, জনপ্রশাসন মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জেলা, পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য