Wednesday, June 25, 2025
Homeআইন-আদালতআওয়ামী লীগ নেতা টিপু ও কলেজছাত্রী প্রীতি হত্যা মামালার আর...

আওয়ামী লীগ নেতা টিপু ও কলেজছাত্রী প্রীতি হত্যা মামালার আর ৪ জন আটক

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান জামাল প্রীতি হত্যার তদন্ত এবার গতি পেয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ১৬ জন আসামী জবানবন্দির সূত্র ধরে শনিবার মতিঝিল ও আশপাশের এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন-জুবের আলম খান রবিন, আরিফুর রহমান সোহেল (ঘাতক সোহেল), খায়রুল ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুরের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান টিটু।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, মতিঝিলের প্রগতি সংঘের উপদেষ্টা ছিলেন প্রয়াত যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কী। এই সংঘ ঘিরেই মিল্কীর সঙ্গে রবিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামের বিপণিবিতানের সামনে গুলিতে নিহত হন যুবলীগ নেতা মিল্কী। আবার মিল্কী হত্যা মামলার আসামি ছিলেন জাহিদুল ইসলাম টিপু। অন্যদিকে গ্রেফতার মাহবুবুর রহমান টিটু কাউন্সিলর মনসুরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন হিসাবে মতিঝিল এলাকায় পরিচিত। তিনি মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।

এলাকায় অনেকে তাকে মনসুরের ‘পিএস’ হিসাবেও ডেকে থাকেন। টিপু হত্যার মিশনে অর্থ সরবরাহসহ সংশ্লিষ্ট কাজে পরোক্ষভাবে তার সম্পৃক্ততার কথা বিভিন্ন সময় টিপুর ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে উঠে আসে। আর ঘাতক সোহেল মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক। সর্বশেষ রাত ১১টার দিকে মতিঝিলের আরামবাগ থেকে গ্রেফতার হওয়া খায়রুল সোহেলের কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

টিপু খুনের মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মুসাকে ফেরানোর পরই এই হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছু রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো-টিপু হত্যায় ব্যবহৃত গুলি নেওয়া হয়েছে পুরানা পল্টনের ‘আর্মস মিউজিয়াম’ নামের একটি অস্ত্রের দোকান থেকে। এই দোকানের মালিক ইমরান হোসেন জিতুর (৩২) কাছ থেকে ১৫ রাউন্ড গুলি নিয়ে খুনের সন্দেহভাজন সমন্বয়কারী সুমন সিকদার মুসার কাছে পৌঁছে দেয় মতিঝিলের ১০নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুর রহমান রাকিব। সেই গুলিগুলোই ব্যবহার হয় টিপুর ‘কিলিং মিশনে’ ব্যবহৃত অস্ত্রে। আর দুবাইয়ে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ মন্টির নির্দেশে ইশতিয়াক আহমেদ জিতু নামের একজন মগবাজারের বাসা থেকে মোল্লা শামীমের কাছে অস্ত্রটি সরবরাহ করে।কিলিং মিশনের আগে সেই অস্ত্রটিই দেওয়া হয় শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশের হাতে। অস্ত্রটিতে দুই রাউন্ড গুলি ছিল। পরে তাতে আরও ১০-১২ রাউন্ড গুলি ‘লোড’ করা হয়।

তদন্তে যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে জিসান ও শামিম ছাড়া সবাই গ্রেফতার হয়েছেন। শামীম কিলিং মিশন বাস্তবায়নকালে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। বর্তমানে তিনি ভারতে আছেন। তাকে দেশে ফেরাতেও অগ্রগতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। প্রসঙ্গত, ২৪ মার্চ রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় শাহজাহানপুরের আমতলা এলাকায় সড়কে প্রকাশ্য গুলি করে খুন করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা টিপু ও কলেজছাত্রী প্রীতিকে।

পেশাদার কিলার বাহিনী এক থেকে দেড় মিনিটের অপারেশন শেষে পালিয়ে যায়। ১২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে টিপুর দিকে। এর মধ্যে তার শরীরে সাত রাউন্ড গুলি লাগে। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলে সামিয়া আফরান জামাল প্রীতি (২২) নামের এক নিরীহ কলেজছাত্রী নিহত হন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

সর্বাধিক জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য